অর্গানিক চন্দন গুরা (50 গ্রাম)
- Status: Stock in Status: Stock out
Product Description
চন্দন পাউডার (50 গ্রাম)
চন্দন প্রাচীন কাল থেকেই রুপচর্চায় অন্যতম উপাদান হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। চন্দনে রয়েছে হাজারো গুনাগুণ। এতে আছে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান যা ব্রণ ও ত্বকের অন্যান্য সমস্যা কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও চন্দন অ্যান্টি- অক্সিডেন্ট উপাদান সমূহের সমন্বয়ে গঠিত যা আমাদের মুখের রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়।
বিভিন্ন রকম কসমেটিক্স ও সুগন্ধিতে চন্দন ব্যবহৃত হয়। বাজারে বিভিন্ন রকম চন্দন কিনতে পাওয়া যায়। যেমনঃ চন্দন পাউডার, চন্দন কাঠ, চন্দন ক্রিম। আজ আমরা এই তিন ধরনের চন্দনের ব্যবহার ও উপকারিতা নিয়ে আলোচনা করব। চন্দন দিয়ে বানানো যেসব ফেইস প্যাকের বিষয়ে আজ আলোচনা করব সেগুলো ব্যবহার করলে যে ত্বক উজ্জ্বল হবেই সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই।
তাহলে আসুন জেনে নেয়া যাক কেমন ধরনের চন্দন ফেইস প্যাক ব্যবহার করলে নিখুঁত ও উজ্জ্বল ত্বক পেতে পারেন আপনিও।
চন্দন পাউডার ব্যবহারের নিয়ম
আমরা অনেকেই জানি না চন্দন কাঠ কিভাবে ব্যবহার করতে হয়। এটার ব্যবহার অনেকের কাছে একটু ঝামেলা মনে হলেও এটির সঠিক ব্যবহার ত্বকের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করে থাকে। চন্দন পাউডার এর সাহায্যে ফেইস প্যাক তৈরি করা খুবই সহজ এবং এতে সময় ও কম লাগে। চন্দন কাঠের ফেইস প্যাক তৈরির ক্ষেত্রে যেই ঝামেলা টা হয় চন্দন পাউডারের ক্ষেত্রে তা একেবারেই হয় না।
একটি পাটায় পরিমাণ মতো পানি দিয়ে চন্দন কাঠ circular motion এ ঘষে নিতে হবে। ২ মিনিট এর মতো ঘষলেই দেখা যাবে কাঠ গলে ঘন পেস্ট তৈরি হয়েছে। হাত দিয়ে তুলে বাটিতে সংরক্ষণ করে ব্যবহার করা যাবে এই চন্দন কাঠ। বিভিন্ন ভাবে চন্দন পাউডার দিয়ে ফেসপ্যাক তৈরি করা যায়।
যেমনঃ
শুষ্ক ত্বকের জন্যঃ পরিমাণ মতো চন্দন পাউডার নিয়ে তার সাথে মেশাতে হবে গোলাপজল ও নারিকেল তেল বা আমন্ড ওয়েল। তিনটি উপাদান এক সাথে মিশিয়ে ত্বকে লাগিয়ে রেখে দিতে হবে ২০ মিনিট এর মতো।শুকিয়ে গেলে আলতো হাতে ঘষে তুলে নিতে হবে। শুষ্ক ও নরমাল স্কিনের জন্য এই প্যাক টি খুবই উপকারী হবে। এই প্যাক টি নিয়মিত ব্যবহারে ত্বক তো উজ্জ্বল হবেই সাথে সাথে মুখের কালো দাগ দূর করতেও অসম্ভব ভালো কাজ করবে।
তৈলাক্ত ত্বকের জন্যঃ পরিমাণ মতো চন্দন পাউডার নিয়ে তার সাথে মেশাতে হবে গোলাপজল বা টমেটোর রস এবং সাথে দিতে হবে ১-২ চামচ মুলতানি মাটি। যা আমাদের ত্বকের অতিরিক্ত তেল শোষণ করে নিবে। তিনটি উপাদান খুব ভালো ভাবে মিশিয়ে নিয়ে মুখে লাগিয়ে রেখে দিতে হবে ১৫ -২০ মিনিট। শুকিয়ে গেলে আলতো হাতে ধুয়ে নিতে হবে। ব্রণ দূর করার জন্য এই প্যাক টি খুবই উপকারী। সপ্তাহে ২ দিন এই প্যাক ব্যবহার করলে খুব সহজেই ব্রণ থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে, সাথে সাথে স্কিন হয়ে উঠবে ফর্সা ও উজ্জ্বল।
ফর্সা হওয়ার জন্য চন্দন ফেসপ্যাকঃ চন্দন ত্বক ফর্সা করার জন্য উপকারী। ফেয়ারনেস ক্রিম ব্যবহার করা যাতে ক্ষতিকারক রাসায়নিক থাকে যা ত্বকের ক্যান্সারের কারণ হতে পারে । এর জন্য আপনি এক চিমটি হলুদ, 1 চা চামচ দুধ এবং 1 চা চামচ বড় চন্দনের পেস্ট মিশিয়ে আপনার মুখে এবং ঘাড়ে লাগান। 30 মিনিট পরে, উজ্জ্বল ত্বক পেতে ঠান্ডা জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
এক্সফোলিয়েশনের জন্য চন্দনঃ সুস্থ ত্বকের জন্য, ত্বক থেকে মৃত কোষ অপসারণ করা গুরুত্বপূর্ণ এবং এর জন্য অবশ্যই প্রাকৃতিক পণ্য ব্যবহার করতে হবে। চন্দন ত্বক এক্সফোলিয়েশনের জন্য সেরা উপাদানগুলির মধ্যে একটি। 1 চা চামচ চন্দন গুঁড়া, 1 চা চামচ কালো বেসন গুঁড়া এবং গোলাপ জল বা দুধ মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন। এই পেস্টটি আপনার মুখের একপাশে সমান গতিতে ম্যাসাজ করুন। আধা ঘণ্টা পর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে এই প্যাকটি ধুয়ে ফেলুন।
সানটান চিকিৎসার জন্যঃ চন্দনে উপস্থিত প্রাকৃতিক তেল সান ট্যান নিরাময়ে সাহায্য করে। এটি রোদে পোড়া দাগ প্রশমিত করতে সাহায্য করে এবং এর একটি শীতল প্রভাব রয়েছে, যা রোদে পোড়ার কারণে লালভাব কমায়। ১ চা চামচ চন্দন গুঁড়ো এবং ১ চা চামচ মধু মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন এবং পেস্টটি ত্বকে লাগান। 30 মিনিট পরে ঠান্ডা জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এই প্রতিকারটি সপ্তাহে তিনবার ব্যবহার করলে ত্বকের সানটান নিরাময় হয়।
রোদে পোড়া ভাব দূর করতেঃ চন্দন পাউডার এর সাথে নিতে হবে লেবু এবং শসার রস। বাইরে থেকে আসার পরে এই পেষ্ট টি নিয়মিত মুখে লাগাতে হবে। শুকিয়ে গেলে ধুয়ে ফেলতে হবে। নিয়মিত ব্যবহারে রোদে পোড়া ভাব চলে যাবে।
মুখের কালো দাগ দূর করতেঃ চন্দন কাঠের পেস্ট এর সাথে নিতে হবে কাচা হলুদ বাটা। সাথে পরিমাণ মতো পানি বা গোলাপজল। ভালো ভাবে মিশিয়ে ত্বকে লাগিয়ে রেখে দিতে হবে ১৫ মিনিট। শুকিয়ে গেলে নরমাল পানি দিয়ে ভালো ভাবে ধুয়ে নিতে হবে।
হলুদে রয়েছে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল প্রোপার্টিস যা আমাদের ত্বককে ব্রনের হাত থেকে রক্ষা করে এবং মুখের যে কোনো কালো দাগ থেকেও মুক্তি দেয়।
ব্রণের দাগ দূর করতেঃ চন্দন কাঠের সাথে বেসন ও ভিটামিন ই ক্যাপসুল মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে মুখে লাগিয় রাখতে হবে ১০-১৫ মিনিট, তারপর নরমাল পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিতে হবে। এই প্যাক টি ব্যবহার করলে ব্রণ এর দাগ আস্তে আস্তে দূর হয়ে যাবে।
চন্দন ফেসিয়াল
ফেসিয়াল আমাদের সবার ত্বকের জন্যই খুব উপকারী। সুস্থ, ব্রণ মুক্ত, উজ্জ্বল ত্বক পেতে মাসে অন্তত ১-২ বার ফেসিয়াল করা প্রয়োজন। তবে ফেসিয়াল এর নাম শুনলেই সবার আগে পার্লার এর চিন্তা আসে। কিন্তু ঘরে বসেই এই ফেসিয়ালের কাজ নিজেই করা যায়। আজ আমরা সঠিক নিয়মে কিভাবে চন্দন দিয়ে ফেসিয়াল করা যায় সেই সম্পর্কে জানবোঃ
সবার আগে আমাদের মুখ ক্লিন করে নিতে হবে। এই ক্ষেত্রে ক্লিনজার হিসেবে আমরা ব্যবহার করতে পারি দুধ। একটি কটন নিয়ে তা তরল দুধ এ ডুবিয়ে নিয়ে পুরো মুখে আলতো ভাবে ঘষে নিবো। এই প্রক্রিয়া আমাদের মুখ কে ডিপ ক্লিন করতে সাহায্য করবে। কিছুক্ষণ আলতো ভাবে ঘষে নরমাল পানি দিয়ে ভালো ভাবে মুখ ধুয়ে নিতে হবে।
এরপর করতে হবে স্ক্রাবিং। স্ক্রাব করলে আমাদের ত্বকের মৃত চামড়া গুলো উঠে আসে। এই ক্ষেত্রে আমরা ব্যবহার করতে পারি টমেটো এবং চালের গুড়া। খুবই আলতো ভাবে স্ক্রাব করতে হবে।
এরপর চন্দনের ফেইস প্যাক টি তৈরি করতে হবে। ২ চামচ চন্দন পাউডার এর সাথে নিয়ে নিতে হবে এক চামচ টমেটোর রস এবং এক চামচ মধু। উপাদান গুলো মিক্স করে নিতে হবে। মুখে লাগিয়ে রাখতে হবে ২০ মিনিট। ২০ মিনিট পরে নরমাল পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে।
এই প্যাক টি মুখের ব্রণ দূর করা সহ, কালো দাগ দূর করা, ত্বক উজ্জ্বল করা এমন আরও অনেক কাজ করবে। মাস এ ৪-৫ বার আমরা এই প্রক্রিয়ায় ফেসিয়াল করতে পারি।
চন্দন ক্রিমঃ আমরা যারা আমাদের ত্বককে উজ্জ্বল করতে চাচ্ছি তাদের জন্য চন্দন ক্রিম হবে খুবই ভালো একটি ক্রিম। বাজারে অনেক ধরনের চন্দন ক্রিম কিনতে পাওয়া যায়। তবে ক্রিম টি যেন অরিজিনাল হয় সেই দিকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে। নয়তো ক্রিম কোনো কাজে আসবে না উলটো ত্বকের ক্ষতি করবে।চন্দন ক্রিম সাধারণত ২০ বছরের বেশি যাদের বয়স তাদের জন্য ব্যবহার করাই ভালো।
চন্দন গুড়ার দামঃ আমাদের দেশ এর অনেক জায়গায় ই চন্দন গুড়া কিনতে পাওয়া যায়। এখন অনলাইনেও চন্দন গুড়া পাওয়া যাচ্ছে। দেখা যায় আমাদের দেশ এ চন্দন গুড়ার দাম ১০০-৩০০ টাকার মধ্যেই হয়ে থাকে। তবে দাম যতোই হোক, আমাদের উচিৎ যেই চন্দন কিনবো তা আসল নাকি নকল সেই বিষয়ে যাচাই-বাছাই করে কেনা৷ নয়তো চন্দন ত্বকের কোনো উপকারে আসবে না।
রুপচর্চায় চন্দন একটি ম্যাজিকাল উপাদান। ত্বকের নানাবিধ সমস্যার সমাধান করতে পারে এই এক চন্দন। তবে অবশ্যই নিজের ত্বকের ধরন বুঝে অন্যান্য উপাদান মিশিয়ে এই চন্দন ব্যবহার করতে হবে।